গরমে সাবধান: তীব্র গরমে সতর্কতা ও যত্নের প্রয়োজন

তীব্র গরম


তীব্র গরম শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি ত্বকের সুস্থতা, শরীরের তাপমাত্রা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত গরমে জ্বর, দুর্বলতা, উবয়স্থান, অতিরিক্ত পটল হয়, ক্ষতিকর রোগ প্রকারের জন্য সৃষ্টি হতে পারে। প্রচুর পানি পান এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে উচিত, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দূর্গতি দূর করা প্রয়োজন। স্নান এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা প্রয়োজন।

কি খেলে শরীর ঠান্ডা হবে?

গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে যে সব খাবার খাওয়া উচিত, তা হচ্ছে দই, টক দই, লাচ্ছি, মাঠা ইত্যাদি শরীর ঠান্ডা রাখতে ও হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। পানিশূন্যতা পূরণ করার পাশাপাশি আমিষ ও ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করে। এ ছাড়া এগুলো অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়ায় এবং হজম করায়। এছাড়াও আরও কিছু খাবার আছে যা গরমে খুবই উপকারী:
1. তরমুজ - এটি প্রায় 92% পানি দ্বারা গঠিত এবং ভিটামিন A ও C প্রচুর পরিমাণে আছে।
2. শসা - প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফাইবার থাকায় শসা শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেটেড রাখে।
3. নারকেল পানি - এটি শরীরের জন্য প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট সমৃদ্ধ পানীয় যা পানিশূন্যতা দূর করে ও শরীরকে সতেজ রাখে।
4. পুদিনা - পুদিনা পাতার চা বা সরবত গরমে খুবই আরামদায়ক। এটি শরীরকে শীতল করে।
5. বাঁধাকপি ও অন্যান্য সালাদ উপকরণ - এগুলি পানি সমৃদ্ধ এবং হজম সহজ।
এগুলি ছাড়াও, গরমে হালকা ও সহজ হজম হয় এমন খাবার খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত মসলাদার, শর্করা বা চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং সরাসরি সূর্যের তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

গরমে সুস্থ থাকতে যা করণীয়

গরমে সুস্থ থাকার জন্য আপনি যে সব উপায়গুলি অনুসরণ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে এই সমস্ত পরামর্শ গুলি দেওয়া হলো:
▶ প্রচুর পানি পান করুন এবং নিজেকে হাইড্রেটেড রাখতে বাড়িতে এবং ভ্রমণের সময় ডাবের পানি এবং লেবুর শরবত পান করুন। সারা দিনে কমপক্ষে ১০-১২ গ্লাস তরল পান করুন।
▶ ঢিলেঢালা, হালকা রঙের পোশাক পরুন। কারণ গাঢ় রঙের পোশাক বেশি তাপ শোষণ করে এবং আঁটসাঁট পোশাক শরীরকে ঘামতে দেয় না। হালকা এবং শোষণকারী সুতার পোশাক ব্যবহার করুন।
▶ ভ্রমণের সময় বা বাইরে কার্যক্রমের সময় ভারী কাজ বা পরিশ্রম এড়িয়ে চলুন; প্রয়োজনে ছায়া স্থানে অবস্থান করুন।
▶ শিশুদের কখনই প্রখর সূর্যের তাপ সংস্পর্শে থাকা গাড়িতে বা যেকোন জাগয়ায় বসে থাকতে দেবেন না এবং ছায়ার নিচে গাড়ি বা যানবাহন পার্ক করার চেষ্টা করুন।
▶ সূর্যের রশ্মির কারণে রোদে থেকে আরামের জন্য বরফের প্যাক এবং ব্যথা উপশমকারীর জন্য মলম প্রয়োগ করুন।
▶ বার বার হাত ধুয়ে নিন এবং খাবার তৈরি এবং পরিবেশন করার সময় সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। খাদ্য ও পানিবাহিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে কোনো খাদ্যদ্রব্য স্পর্শ বা রান্না করার আগে পাত্র ও অন্যান্য বস্তু ধুয়ে নিন। যতবারই যখনই ওয়াশরুমে যাবেন, ততবার অবশ্যই হাত ধুয়ে নেবেন।
▶ প্রচন্ড গরমের সময় আধাসিদ্ধ খাবার এবং রাস্তার খোলা খাবার খাবেন না। তরমুজ, শসা, আখ এবং আমের মতো তাজা রসাল ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
▶ দুপুরের রোদের সময় বাড়ির জানালা বন্ধ রাখুন, যাতে তাপ বাড়ির ভেতরে আটকে না যায়।
▶ খাবার স্যালাইনের (ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন) মজুত হাতে রাখুন। যা বিপদে আপনাকে সাহায্য করবে যা সহজেই কিনতে পাওয়া যায়। তবে, যদি না পাওয়া যায়, নিজে এগুলো বাড়িতে তৈরি করতে পারেন।
▶ চোখের ব্যথা এড়াতে এবং সংক্রমণের আরও বিস্তার এড়াতে, আপনার হাত সঠিকভাবে পরিষ্কার রাখুন, ব্যথা কমাতে পরিষ্কার পানি দিয়ে আপনার চোখ বারবার ধুয়ে নিন।
▶ কমপক্ষে ১৫ এসপিএফ (সান প্রোটেক্টর ফ্যাক্টর)সহ সানস্ক্রিন প্রয়োগ করে ত্বক ঢেকে রাখুন এবং সুরক্ষিত রাখুন।
▶ খুব গরম বা বেশি সময় সূর্যের তাপ-এক্সপোজার হতে এড়িয়ে চলুন, বিশেষ করে দুপুর থেকে বিকাল তিনটা পর্যন্ত, যখন সূর্যের রশ্মি সরাসরি লম্বাভাবে পড়ে তা থেকে।
▶ ভ্রমণের সময় বা বাইরের কার্যকলাপের জন্য সানগ্লাসসহ ক্যাপ পরে সূর্যের তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করুন। টুপি এবং সানগ্লাস ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মিকে মুখের সংবেদনশীল স্থানে আঘাত করা থেকে বাধা দেবে এবং আপনার মুখকে সতেজ ও বলিরেখামুক্ত রাখবে।
এই সার্বজনিক পরামর্শের মধ্যে থাকা সকল পদক্ষেপ নিতে নিজেকে সক্রিয় রাখতে পারলে আপনার গরমে সুস্থ থাকার সম্ভাবনা উন্নত হবে।

অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচার দোয়া

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাওয়ালি নি‘মাতিকা ওয়া - তাহবিলি আফিয়াতিকা ওয়া ফুজাআতি নিকমাতিকা ওয়া জামিয়ি সাখাতিকা’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আপনার নিয়ামতের বিলুপ্তি, আপনার অনুকম্পার পরিবর্তন, আকস্মিক শাস্তি এবং আপনার সমস্ত ক্রোধ থেকে।‘ (মুসলিম ২৭৩৯, আবু দাউদ ১৫৪৫, রিয়াদুস সালেহিন ১৪৭৮)

গরমে বাচ্চার যত্ন কিভাবে নিতে হয়?

শিশুর গরমে সুস্থ রাখার জন্য নিম্নলিখিত পরামর্শগুলি হলো:
1. নিয়মিত সাবান দিয়ে গোসল করান।
2. শিশুর খাবার নির্বাচনে যত্নশীল হতে হবে। শিশুকে পুষ্টিকর এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে এমন খাবার বারবার দিতে হবে।
3. অন্যান্য খাবারের সঙ্গে গরমে শিশুকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও ফলের জুস খাওয়ান।
4. গরমে শিশুর দুর্বলতা কাটাতে ঘন ঘন খাওয়ার স্যালাইন খেতে দিন।
5. সুতি পাতলা কাপড়ের নরম পোশাক পরান।
6. বাইরের গরমে শিশুকে কম বের করুন।
7. ধুলাবালি থেকে দূরে রাখুন।
8. গরমের সময় শিশুর চুল ছোট রাখুন।
9. শিশুর যেন পর্যাপ্ত ঘুম হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।
1০. শিশু ঘেমে গেলে ঘাম বার বার মুছে দিতে হবে। শরীরে ঘাম শুকিয়ে গেলে শিশুর জ্বর হতে পারে। অনেক সময় এমন জ্বর অল্পদিনে এমনিতেই সেরে যায়। কিন্তু বেশি দিন হয়ে গেলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
এই পরামর্শগুলি মেনে শিশুদের গরমে সুস্থ রাখতে সাহায্য করতে পারে।

তীব্র গরমে আপনার পরিকল্পনা কি হওয়া উচিত?

গরমে আমার পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমি তীব্র গরমের কারণে সুস্থ থাকার জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেবো:

১. পর্যবেক্ষণ এবং পরিকল্পনা করা:

তীব্র গরমে আমি পর্যবেক্ষণ করবো অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থানীয় তথ্যের উপরে ভিত্তি করে। সর্বশেষ তথ্য ও পূর্বাভাস প্রাপ্ত করবো যাতে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা তৈরি করা যায়।

২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা:

প্রতিদিনের জীবনে তীব্র গরমের মাঝে আমি সবসময় পরিকল্পনা করবো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য। পর্যবেক্ষণের পরে, আমি বিভিন্ন প্রাসাদ, যেমন পরিমাণিত পরিষ্কার পানি, সুস্থ খাবার এবং উষ্ণতা অনুসরণ করবো।

৩. কুল জাগান এবং বেশি পানি পান:

গরমে আমি নিয়মিতভাবে কুল জাগানো এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবো। এটি হাইড্রেশন বজায় রাখবে এবং গরমে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে।

৪. আঁটসাঁট পোশাক পরা:

গরমে তীব্র গরমে আমি হালকা, স্বাবাহিক ফ্যাব্রিক থেকে তৈরি পোশাক পরব। এটি হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং অতিরিক্ত তাপ থেকে রক্ষা করবে।

৫. সূর্যালো থেকে পরিহার নিতে সতর্ক হতে হবে:

সূর্যালোর কারণে অতিরিক্ত তাপ হানা সতর্ক হতে হবে এবং আলস্য অনুভব করলে আমি একটি আশ্রয়ণ স্থানে চলে যাবো।

৬. মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন:

একটি স্বাস্থ্যবিধি এবং পরিকল্পনা যোগানোর অংশ হিসেবে, আমি মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সাবধানতা ধরবো। অতিরিক্ত গরমে স্বাস্থ্য অধিক দিকে প্রভাব ফেলতে পারে, তাই আমি নিয়মিত মেডিটেশন এবং আধ্যাত্মিক প্রথার সাথে জড়িত থাকবো।
এই কৌশলগুলি যথাযথ স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত সুস্থতা সংরক্ষণে সাহায্য করবে। তাই এই পরিকল্পনা অনুসরণ করে আমি গরমে সুস্থ থাকতে পারবো।

হঠাৎ করে রাগ, প্রচণ্ড গরম লাগা মোটেই ভাল লক্ষণ নয়

রাগ এবং প্রচণ্ড গরম লাগা দুটোই আমাদের স্বাভাবিক অনুভূতি হতে পারে, তবে যে সময়ে এগুলি নিয়ন্ত্রণ থেকে বাইরে চলে যায় তার সাথে সম্পর্কটি সহ্যযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে আপনি আল্লাহর নাম ও কার্যের মাধ্যমে সহ্য বাড়াতে পারেন। আপনার প্রচেষ্টার সঙ্গে আপনার মেধার উপর নির্ভর করে বিশেষ ক্ষমতা প্রাপ্ত হতে পারে যা আপনাকে ক্ষমতার দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। যদি এই রোগী সময়ে সমস্যার সাথে মোকাবেলা করতে না পারেন, তাহলে এটির জন্য চিকিৎসার সাহায্য অনুরোধ করা উচিত।

তীব্র গরম সম্পর্কে ১০টি প্রশ্ন ও উত্তর

১. গরম ক্ষমতা কি? 

উত্তর: গরম ক্ষমতা হলো বিশেষ একটি পদার্থের প্রাপ্ত গরমীয় শক্তির মাত্রা বা একক।

২. গরম সময়ে কি গরম ক্ষমতা একটি সমস্যা হতে পারে?

উত্তর: হাঁ, গরম সময়ে অতিরিক্ত গরম ক্ষমতা একটি সমস্যা হতে পারে, যা সহজেই শারীরিক অসুস্থতা এবং অন্যান্য সমস্যার জন্য কারণ হতে পারে।

৩. গরম ক্ষমতা কিভাবে মাপা হয়?

উত্তর: গরম ক্ষমতা মাপা হয় উপযুক্ত পরিক্ষা যন্ত্র ব্যবহার করে, যেমন থার্মোমিটার।

৪. গরম সময়ে আমাদের কিভাবে নিজেকে রক্ষা করা উচিত? 

উত্তর: গরম সময়ে নিজেকে রক্ষা করার জন্য প্রচুর পানি পান করা, হাইড্রেটেড থাকা, শরীরের আবহাওয়া এবং মসৃণ পোশাক পরিধান ইত্যাদি উপায় অনুসরণ করা উচিত।

৫. গরম সময়ে কি খেতে উচিত?

উত্তর: গরম সময়ে প্রাথমিকভাবে পুষ্টিকর খাবার এবং তরল পদার্থ খাওয়া উচিত। আরো সবজি এবং ফলের জুস খাওয়া ভালো।

৬. গরম ক্ষমতা কি আমাদের স্বাস্থ্যের উপর কিভাবে প্রভাব ফেলে?

উত্তর: গরম ক্ষমতা স্বাস্থ্যের উপর অনেক প্রভাব ফেলতে পারে, যেমন দ্বারা অসুস্থতা এবং ক্ষতি সৃষ্টি করে।

৭. গরম সময়ে কি করণীয়?

উত্তর: গরম সময়ে প্রচুর পানি পান করা, শরীরের সুস্থতা বজায় রাখা এবং সুস্থ খাবার খেতে উচিত।

৮. গরম সময়ে ধূমপান করা কি ক্ষতিকর?

উত্তর: হ্যাঁ, গরম সময়ে ধূমপান করা ক্ষতিকর হতে পারে এবং আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

৯. গরম সময়ে কি ধরণের পোশাক পরা উচিত?

উত্তর: গরম সময়ে মসৃণ এবং হালকা পোশাক পরা উচিত, যাতে তা শরীরের গরমীয় প্রদর্শন করে না।

১০. গরম সময়ে পর্যাপ্ত ঘুম কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

উত্তর: গরম সময়ে পর্যাপ্ত ঘুম বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শরীরের পুনরুদ্ধারের জন্য মূল অংশ হিসাবে গণ্য হয়।